গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এড়ানোর কৌশল
মাতৃত্বের গৌরব এবং আকাঙ্ক্ষা যেমন বিশাল, তেমনি এর সাথে কাজ করে বিশাল মানসিক চাপ। কেমন হবে অনাগত সন্তান, কেমন যাবে গর্ভাবস্থার বাকি দিনগুলো; এরকম হাজারো প্রশ্নে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। কিন্তু এই মানসিক দুরবস্থার প্রভাব পড়ে গর্ভের শিশুর উপর। তাই এই চাপ নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক।
এইসময় বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদের পাশে পাওয়া জরুরি। বন্ধু এবং স্বজনেরা সবসময়ই আপনার হিতাকাঙ্ক্ষী এবং তারা আশেপাশে থাকলে আপনার মন প্রফুল্ল হয়ে উঠবে। যদি এমন কেউ থাকে যাকে আপনার অপছন্দ, তাহলে তাঁর সঙ্গ এড়িয়ে চলুন।
যখন আপনি অনুভব করবেন আপনি আপসেট হয়ে পড়ছেন, তখন কিছুক্ষণের জন্য চিন্তা থেকে মুক্তি নিন। এইসময় যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন, প্রিয় কোন বই পড়তে পারেন, প্রিয় বন্ধুর সাথে ফোনে বা সরাসরি কথা বলতে পারেন, এমনকি ঘুমাতেও পারেন। এতে আপনার মস্তিষ্ক এবং হৃদয় আবার সতেজ হয়ে উঠবে এবং ব্লাড প্রেশার, শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক হবে।
মানসিক চাপ থেকে মুক্তির একটা ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম। গর্ভাবস্থায় যদি আপনার চিকিৎসক ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে নিষেধ না করেন, তাহলে আপনি হাল্কা ব্যায়াম করতে পারেন যেমনঃ সাতার কাটা, দ্রুত হাটা বা যোগ ব্যায়াম।
এছাড়াও গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক। যদি আপনি দ্রুত হৃৎস্পন্দন, উচ্চ রক্তচাপ এবং পেশীতে টান অনুভব করেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনি মানসিক চাপে আছেন। এক্ষেত্রে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের অনুশীলন খুব দ্রুত সমাধান এনে দিতে পারে।
যেসকল খাবার ও পানীয় টেনশন বৃদ্ধি করে এবং শরীরে অস্বাভাবিক অবস্থার উদ্রেক করে সেসব খাবার ও পানীয় বর্জন করা বাঞ্ছনীয়। যেমন: অ্যালকোহল শুধু মানসিকভাবেই গর্ভবতী মাকে অসুস্থ করে না, এর শারীরিক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এছাড়াও ঘনঘন চা বা কফি খাওয়াও মানসিক চাপ বৃদ্ধির পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে চা বা কফি পান করলে তা ঘুমকে ব্যাহত করে এবং তা মানসিক চাপ ও টেনশনের উদ্রেক করতে পারে। কিছু সাধারণ বিষয় এড়িয়ে এবং সাথে সাথে কিছু স্বাভাবিক বুদ্ধি খাটিয়ে আপনি সহজেই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। মানসিক চাপের ফলে গর্ভের শিশুর সমূহ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।