শিশুর অপুষ্টি প্রতিরোধে যা যা করণীয়
যেসকল শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের বিপাক প্রক্রিয়ায় নানা অসংগতি দেখা দেয়। তাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যায়। আন্ত্রিক গণ্ডগোল লেগে থাকে। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হয়। এসকল শিশুরা নানা অসুখ বিসুখে পতিত হয়ে পঙ্গুজীবনযাপনের এমনকি মৃত্যু ঝুঁকিতে অবস্থান করে অনেক বেশি।
এই চরম অবস্থায় বাচ্চা যেন না পড়ে তার শ্রেষ্টতম পদক্ষেপ হলো শিশুর অপুষ্টি প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো। প্রতিটি পরিবার বাচ্চার পুষ্টি সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে পারে। কার্যকর এসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো হলোঃ
(১) শিশুর প্রথম ও একমাত্র খাবর হিসেবে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো এবং পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ চালিয়ে যাওয়া। এমনকি গরমকালেও শিশুকে আলাদা করে পানি খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।
(২) বাচ্চার ৬ মাস বয়সে বুকের দুধের পাশাপাশি স্বাভাবিক পারিবারিক খাবার শুরু করা।
(৩) শিশুর মিশ্র খাবার খাওয়া বাঞ্ছনীয়। এতে করে এক ধরনের খাবারে কোনো প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিডের ঘাটতি থাকলে অন্য উপাদানে তা মিটে যায়। তেল, ডাল, চাল, শাকসবজি, ডিম, মাছ, মাংস সহযোগে পাকানো আধা তরল খাবার খিচুড়ি ইনফ্যান্ট বয়সের শিশুর জন্য দারুণ উপযোগী খাবার।
(৪) দুধ, মাংস, ডিম এরকম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার সাধ্যে কুলালে বুকের দুধের পাশাপাশি উইনিং ফুড সংযুক্ত করা যেতে পারে। এতে করে শিশুর দৈনিক খাবারের রুটিনে প্রোটিন সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
(৫) শিশুকে সময়মত টিকা দান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে টিকা দেওয়ার সাহায্যে যেসব মারাত্মক শিশুরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব, সেসব রোগ হতে বাচ্চাকে সুরক্ষা করা যায়। ফলে ওই সব অসুখে আক্রান্ত হয়ে শিশুর অপুষ্টি ভোগার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
(৬) মায়ের উচিৎ দুইটি সন্তান গর্ভধারণের ন্যুনতম বিরতিকাল মেনে সন্তান গ্রহণ করা যাতে করে প্রতিটি বাচ্চা পূর্ণ মেয়াদে মায়ের বুকের দুধ পান করে স্বাভাবিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারে।